কাঁচা কাঁঠালের গুনাগুন কি? -কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠালে ভিটামিন 'এ' থাকে। 'এ' ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁঠালের আন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চোখের রেটিনার ক্ষতি প্রতিরোধ করে। কাঁচা কাঁঠালে ০.৩ মি গ্রা বি-১ পাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল খেলে শরীরের বিভিন্ন অংশের বাথা ভালো হয়ে যায়
কাঁচা কাঁঠালের বিচিতে ১.২ মি .গ্রা বি-১ পাওয়া যায়। এতে রয়েছে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম যা শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্টও ভালো থাক। এই কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্তনে থাকে। এবং বদহজমে কোনো বিঘ্ন ঘটায় না।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
- কাঁচা কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা কি
- কাঁঠালের গুনগুলি কি কি
- কাঁঠাল খাওয়ার পরে যে ৪ টি খাবার খাবেন না
- কাঁঠাল খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
- ইঁচড়ের উপকারিতা ও ইঁচড় এর বিস্ময়কর গুনাগুন
- গর্ভ অবাস্তাই কাঁঠাল খাওয়া যাবে কি
- কাঁঠাল খাওয়ার অপকারিতা কি কি
- কাঁঠালের বীজ খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁঠালে কি ধরনের পুষ্টি পাওয়া যায়
- কোন কাঁঠাল খেলে বেশি উপকার হয় রান্না নাকি পাকা
কাঁচা কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা কি
কাঁঠালে সামান্য পরিমানে প্রোটিন পাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠালে ২০৬ গ্রাম ও কাঁঠালের বীজে ৬.৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এই প্রোটিন দেহের গঠনে সাহায্য করে। কাঁচা কাঁঠালে ০.৩ ও কাঁঠালের বীজে ০.৪ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়। কাঁঠালে ক্যালসিয়াম থাকে যা হার শক্ত রাখে।তাই কাঁঠাল খেলে শারীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বারে।
এমনকি ক্যান্সার এবং টিউমারের বিরুদ্ধেও শরীরের প্রতিরোধ গরে ওঠে। কাঁঠালে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন 'এ' রয়েছে যা রাত কানা রোগের কে প্রতিরোধ করে। কাঁঠাল খেলে বদ হজমের সমস্যা সমধান হয়। কাঁঠাল গাছের শিকর সিদ্ধ করে খেলে হাঁপানি রোগের থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। চর্মরোগের সমস্যা সমধানে এই শিকর ভালো কাজ করে।
কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমানে খনিজ ও উপাদান মাঙ্গানিস যা রক্তের শর্করা ও চিনির পরিমান নিয়ন্তনে রাখতে সাহায্য করে। কাঁঠাল খেলে হাড়ের গঠন বা হাড় মজবুত কঠন। ৬ মাস পর থেকে বাচ্চাকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে বাচ্চার ক্ষুধা নিবারন হয় পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব ও পূরণ হয়।
কাঁচা কাঁঠাল খাওয়া যায় সবজি হিসেবে। কাঁচা কাঁঠালকে এঁচোড় নামেও দাকা হয়। এই এঁচোড় দিয়ে তৈরি করা হয় উপাদেয় অনেক খাবার। কাঁঠাল কিন্তু আমাদের শরীরেই জন্যও বেশ উপকারি। কাঁঠালে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২, পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায়।
এসব উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ করে কাঁঠাল।
কাঁঠালের গুন গুলি কি কি
১০০ গ্রাম কাঁঠালে মাত্র ৯৫ ক্যালরি। ক্যালরি দিক থেকে অনেক কম আথর্চ পুষ্টির দিক থেকে অনেক গুন বেশি অনেক মুলবান। কাথালে ফ্যাট কম কাঁঠাল খেলে ওজন বারে না। কাঁঠালের রং হলুদ 'এ' ভিটামিন রয়েছে যা রাত কানা রোগ প্রতিরোধ করে। কাঁঠাল ব্লাডপেসার কন্ট্রোল করে, আন্টিআজিমে হেল্প করে।
এটা আমাদের মেইন্টেন্ড হেলদ নার্ভাস, টেনশন এগুলোকে রিমুভ করতে কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে পাকা কাঁঠাল। সুগার কন্টল করতে হেল্প করে কাঁঠাল। কাঁঠাল খেলে শরীরের রক্তের পরিমান ঠিক থাকে এবং রক্ত সল্পতা দূর করে। থাইরয়েড রোগ থেকে বাঁচতে কাঁঠাল খান কারন এতে এমন কিছু ভিটামিন রয়েছে যা থাইরয়েড রোগ থেকে আমাদের বাচায়।
কাঁঠালের মধ্যে অনেক অতান্ত শক্তিশালী আন্টি অক্সিজেন রয়েছে যেগুলো শরীর থেকে ক্যান্সার রোগকে তাড়ায় এবং মস্তিস্ককে রাখে চনমনে। যে কোন ফলের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন বা গুনাগুণ রয়েছে কাথালে। মাছ, মাংস, ডিমে যে ভিটামিন রয়েছে কাঁঠালের মধ্যে রয়েছে সেই পরিমান ভিটামিন। কাঁঠালের গুনাগুন অপরিসীম।
কাঁঠাল খাওয়ার পরে যে ৪টি খাবার খাবেন না
কাঁঠাল খাওয়ার পরে যে ৪টি খাবার খেলে অনেক ক্ষতি হয় সেই সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানবো। এবং যারা ভুলেও কাঁঠাল খাবেন না।চলুন জেনে নেই কাঁঠাল খাওয়ার পরে কি কি খাবেন না।
পেপেঃ কাঁঠাল খাওয়ার পরে কাঁচা অথবা পাকা পেঁপে খেলে তার ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।
দুধঃ কাঁঠাল খাওয়ার পরে দুধ খেলে পেট ফুলে যেতে পারে এবং তার ত্বকে ফুস্কুরি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবং সাদা রোগ হতে পারে।
ঢেঁড়সঃ কাঁঠাল খাওয়ার পরে ঢেঁড়স খেলে পায়ে বা শরীর বাথা হতে পারে।
তাই সুস্থ ভাবে বাঁচতে ভুলেও এই ৪টি খাবার খাবেন না। কাঁঠাল খাওয়ার পরে উপরোক্ত খাবার গুলো খেলে তার মৃত্যু হতে পারে। এবং সে অসুস্থ হয়ে যাবে যে খারার যখন খেলে ক্ষতি হয় সেই খাবার না খাওয়াই ভাল।
কাঁঠাল খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন যা আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- শরীরে জীবাণুর আক্রমণ প্রতিরোধ করে।
- দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং চুল পরা আটকায়।
- ত্বক ভালো রাখে ও ব্রন দূর করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে ও ক্ষুধা কম লাগে।
- হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ও রক্ত সল্পতা দূর করে।
- কোলন ক্যানসার দূর করে এবং হার মজবুত করে।
- কোলেস্টেরল ও রক্ত চাপ নিয়ন্তন করে।
- থাইরয়েড আয়ত্তে রাখে এবং দাঁতের মাড়ি শক্তিশালী করে।
- কাঁঠালে প্রচুর আঁশ থাকায় কোস্ট কাঠিন্য দূর করে
- পরিমিত কাঁঠাল খেলে রক্ত শূন্যতা দূর করে এবং হ্রদ রোগের ঝুঁকি কমে।
কাঁঠাল আমাদের দেহের জন্য উপকারি একটা ফল। কাঁঠাল সারা বছর পাওয়া যায় না। তাই কাঁঠালকে রস করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। কাঁচা অথবা পাকা কাঁঠাল খেলে শরীরের অনেক ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয়। তবে একেবারে বেশি কাঁঠাল খেলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অল্প অল্প করে কাঁঠাল খাওয়াই ভালো এতে হজম হতে সুবিধা হয়।
কাঁঠাল খাওয়ার অপকারিতা কি কি
সকাল বেলা খালি পেটে এবং রাত্রে ঘুমানোর আগে ভুলেও কাঁঠাল খাবেন না এতে আপনার মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের কাঁঠাল না খাওয়াই ভাল। খালি পেতে কাঁঠাল খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এবং অনেক সময় হজমে সমস্যা হয়ে থাকে। আতিরিক্ত কাঁঠাল খেলে পেট ফুলে যেতে পারে।
কাঁঠাল খাওয়ার পরে মধু খেলে মারাত্মক ক্ষতি করে। এবং সুগারের পরিমান বেরে জেতে পরে। যাদের ডায়াবেটিক্স আছে তারা অবশ্যই এই ফলটি এড়িয়ে চলুন। কাঁঠাল বেশি খেলে পেটও ফুলে যেতে পারে। কাঁঠাল খাওয়ার পরে জল ও কোক খেলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাঁঠালে পর্যাপ্ত পরিমানে কার্বো হাইড্রেড থাকে।
আরো পরুনঃ কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে জেনে নিন
যা আমাদের দেহের বড় ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত কাঁঠাল খেলে বদ হজমের সৃষ্টি করে। কাঁঠাল খাওয়ার পরে পান খেলে সেই বেক্তির মৃত্যু বরণও করতে পারে। কাঁঠাল খেয়ে ঢেঁড়স খেলে পায়ে বাথা ও আসিডিটির সামসা হতে পারে। তাই সকালে খাওয়ার আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা পরে কাঁঠাল খাবেন। অতিরিক্ত কাঁঠাল খাওয়া কারো উচিত না।
কাঁঠালের বীজ খাওয়ার উপকারিতা
কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে আশ্চর্য কিছু নিউট্রেশ নাল বেনি ফিত। এতে রয়েছে রিবফ্লাবিন ও থায়ামিন। অ্যারো গুরত্ত পূর্ণ তথ্য হচ্ছে কাঁঠালের বিচিতে লিগ্নেন্স, সাপনিন্স, আইস ফ্লেবেবনস ও ফাইট্রনিউট্রিয়েন্স রয়েছে যেগুলো একই সাথে ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে এবং এগুলো দীর্ঘ স্থায়ীভাবে আমাদের চেহারাকে ধরে রাখে।
বদহজম রোধে কাঁঠালের বীজ খুবই কার্যকরি। এটি রোদে শুকিয়ে বেঁটে পউডারের মতো করে ফেলুন বদ হজমে হোম মেড রেমেডি হতে পারে এই পাউডার। কাঁঠালের বীজ খেলে কমবে কোস্ট কাঠিন্ন সমসা। কারণ প্রচুর ফাইবার থাকে কাঁঠালের বিজে। আপনি যখনি কাঁঠাল খাবেন এই কাঁঠালের বীজ গুলো যদি রান্না করে খান।
তাহলে কোষ্ঠ কাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন কখনই আপনার পেটে বদহজম হবেনা। কাঁঠালের বীজের উপরের লাল চামড়াটা ফেলে দিয়ে যদি খেতে চান তাও খেতে পারবেন। কাঁঠালের বীজ আমাদের ৯টি গুরুত্ব পূর্ণ উপকার করে। এটি খেলে রাত কানা রোগ নিরাময় করে কারন এই কাঁঠালের বীজে ভিটামিন 'এ' রয়েছে।
কোন কাঁঠাল খেলে বেশি উপকার রান্না নাকি পাকা
কাঁঠাল আমাদের অনেক উপকার করে থাকে সেটা রান্না বা পাকা হোক। কাঁচা কাঁঠাল রান্না কারে খেতে অনেক মজা লাগে। কাঁচা কাঁঠালে আঁশ বেশি থাকার কারনে এবং ক্যালরি কম থাকার কারনে এটি সরিরের কোলেস্টেরল জমতে দেয় না জার ফলে আপনার সার্জারি ও হার্ট খুবি ভালো থাকে। উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ হোল কাঁচা কাঁঠাল। এক কাপ কাঁচা কাঁঠালে তিন গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এবং হারের ক্ষয় রোধ করে কাঁঠাল।
কাঁঠালের রান্না করে খেতে অনেক ভালো লাগে। চিংরি মাছ দিয়ে কাঁঠাল রান্না করলে অনেক ভালো লাগে। কাঁঠালের বীজ আমাদের অনেক উপকার করে থাকে এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন থাকে। কাঁঠাল রান্না করে খেলে মুখের রুচি বারে এবং মাড়ি মজবুত করতে সাহায্য করে। কাঁচা কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও প্রোটিন শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের বাথা সারাতে সাহায্য করে।
পাকা কাঁঠাল রস করে বাচ্চাদের খাওয়ালে তাদের শরীরের সকল ভিটামিনের অভাব পুরন করে। পাকা কাঁঠাল খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। এই কাঁঠাল সারা বছর পাওয়া যায় না তাই পাকা কাঁঠাল ফ্রিজে সংরক্ষণ করে অনেক দিন পর্যন্ত রাখতে পারবেন। পাকা কাঁঠালের বীজ ভেজে অথবা রান্না করেও খেতে পারেন। কাঁঠালের বীজের গুরা করে খেলে গ্যাস থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তাই রান্না বা পাকা সব রকমের কাঁঠালই আমাদের বেশ উপকার করে থাকে।
শেষ কথা
কাঁঠালের গুনাগুন বলে শেষ করার মত নয়। পাকা কাঁঠাল, কাঁচা কাঁঠাল, কাঁঠালের বীজ সবি আমাদের দেহের বিভিন্ন অংশের উপকার করে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে। এই ফলটি রান্না করে খাওয়া যায়। কাঁঠাল খেলে অনেক রোগের কবল থেকে বাচা যায় ও ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে থাকে। কাঁঠাল খেলে ওজন বৃদ্ধি হয় না ও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা থাকে না।
কাঁঠালে ভিটামিন এ ছে জার ফলে রাত কানা রোগ হয় না এবং বাচ্চাদের খাওয়ালে চোখের জতি ভালো হয়। তবে যে কোনো জিনিস বেশি খেলে ক্ষতি করে। তেমনি কাঁঠাল বেশি খেলে পেট ফুলে জেতে পারে বা হজমে সমস্যাও হতে পারে। তাই একেবারে বেশি না খাওয়াই ভালো। খালি পেটে ভুলেও কাঁঠাল খাবেন না। কাঁঠাল যেমন উপকার করে তেমন অপকারও করে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url